- আবূ মুয়াবিয়া লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
জুমআর খুতবা অন্য কোন ভাষায় প্রদান করা বিদআত। আরবী ছাড়া অন্য কোন ভাষায় খুতবা প্রদান করা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং পরবর্তীতে কোন সাহাবী থেকেই প্রমাণিত নয়।
নবীজী সাঃ এর মৃত্যুকালের শেষ সময়ে আরবের বাহিরের অনেক অনারবী মুসলমানই মসজিদে নববীতে এসে নামায পড়তো। কিন্তু কোনদিনও কোন জুমআর খুতবা অন্য ভাষায় অনুবাদ করা হয়নি।
সাহাবায়ে কেরামের জমানায় এর কোন নজীর পাওয়া যায় না। হযরত উমর রাঃ এর জমানায় অনারবী মানুষে ভরে গিয়েছিল মদীনা। কিন্তু কোনদিন মসজিদে নববীতে জুমআর খুতবা আরবী ছাড়া অন্য ভাষায় দেয়া হয়েছে বা দোভাষী দিয়ে অন্য ভাষায় তা অনুবাদ করা হয়েছে এর কোন নজীর নেই।
সেই সাথে সাহাবায়ে কেরাম বিভিন্ন দেশে দ্বীনের দাওয়াত নিয়ে গেছেন। সেসব রাষ্ট্রে ইসলামের আলো ছড়িয়েছেন। কিন্তু অনারবী রাষ্ট্রে এসে আরবী ছাড়া অন্য ভাষায় খুতবা দিয়েছেন বা তাদের আরবী খুতবা অন্য ভাষায় অনুবাদ করে জুমআর সময় শুনানো হয়েছে এর কোন নজীর নেই।
যে কাজ রাসূল সাঃ করেননি, বা পরবর্তী সাহাবায়ে কেরাম করেননি। সে কাজ দ্বীন হিসেবে করা সুনিশ্চিতভাবেই বিদআত। এতে কোন সন্দেহ নেই। তাই জুমআর খুতবা আরবী ছাড়া অন্য কোন ভাষায় প্রদান করা বিদআত। এটি পরিত্যাজ্য।
নামাযের কিরাত যেমন আরবী ছাড়া অন্য কোন ভাষায় পড়া বিদআত। ঠিক তেমনি জুমআর খুতবা আরবী ছাড়া অন্য কোন ভাষায় দেয়া বিদআত।
যারা এ বিদআতি কাজটি করে যাচ্ছেন, তাদের কাছে এ বিষয়ে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এবং সাহাবায়ে কেরাম থেকে সহীহ হাদীসের দলীল চান। তাহলেই দেখবেন, দলীল নয় মনের খাহেশাতই হচ্ছে তাদের দলীল।
সুতরাং এ বিদআতি কাজ থেকে সকলেরই বিরত থাকতে হবে।
হযরত ইরবাস বিন সারিয়া রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,
مَنْ يَعِشْ مِنْكُمْ يَرَى بَعْدِي اخْتِلَافًا كَثِيرًا، فَعَلَيْكُمْ بِسُنَّتِي وَسُنَّةِ الْخُلَفَاءِ الرَّاشِدِينَ الْمَهْدِيِّينَ، وَعَضُّوا عَلَيْهَا بِالنَّوَاجِذِ، وَإِيَّاكُمْ وَمُحْدَثَاتِ الْأُمُورِ، فَإِنَّ كُلَّ مُحْدَثَةٍ بِدْعَةٌ، وَإِنَّ كُلَّ بِدْعَةٍ ضَلَالَةٌ
তোমাদের মাঝে আমার পর জীবিত থাকবে, তারা অনেক মতভেদ দেখবে। তখন তোমাদের উপর আমার এবং আমার হেদায়াতপ্রাপ্ত খুলাফায়ে রাশেদীনের সুন্নত আঁকড়ে ধরবে। সেটিকে মাড়ির দাত দিয়ে কামড়ে রাখবে। আর সাবধান থাকবে নব উদ্ভাবিত ধর্মীয় বিষয় থেকে। কেননা ধর্ম বিষয়ে প্রতিটি নতুন বিষয়ই বিদআত। আর প্রতিটি বিদআতই গোমরাহী। {মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১৭১৪৪}
عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ্রمَنْ أَحْدَثَ فِي أَمْرِنَا هَذَا مَا لَيْسَ مِنْهُ فَهُوَ رَدٌّ
হযরত আয়শা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি আমাদের ধর্মে নেই এমন বিষয় ধর্মীয় বিষয় বলে আবিস্কার করে তা পরিত্যাজ্য। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৭১৮, বুখারী, হাদীস নং-২৬৯৭}
একটি মনগড়া কিয়াসের জবাব
যারা রাসূল সাঃ ও সাহাবায়ে কেরামের পদ্ধতিকে বাদ দিয়ে নিজের নফসের পূজা করে আরবী ছাড়া অন্য ভাষায় খুতবা দিয়ে থাকেন, তারা কুরআন ও হাদীস রেখে নিজের অজ্ঞ মস্তিস্ক প্রসূত একটি ভ্রান্ত কিয়াসের আশ্রয় নিয়ে থাকেন। সেটি হল, তারা বলেন, খুতবা হল একটি বক্তৃতা। আর বক্তৃতা সেই ভাষায়ই দিতে হবে, যে ভাষায় মানুষ বুঝে থাকে।
জবাব
১
খুতবা মানে শুধু বক্তৃতা এটি অজ্ঞতাসূচক বক্তব্য। কুরআন ও হাদীসে জুমআর খুতবাকে শুধু বক্তৃতা সাব্যস্ত করা হয়নি। আর আরবীতে বক্তৃতাকে বলা ‘তাযকীর’ খুতবা বলা হয় না।
কুরআনে খুতবাকে জিকির বলা হয়েছে-
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا نُودِيَ لِلصَّلَاةِ مِن يَوْمِ الْجُمُعَةِ فَاسْعَوْا إِلَىٰ ذِكْرِ اللَّهِ وَذَرُوا الْبَيْعَ ۚ ذَٰلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِن كُنتُمْ تَعْلَمُونَ [٦٢:٩
মুমিনগণ, জুমআর দিনে যখন নামাযের আযান দেয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের পানে ত্বরা কর এবং বেচাকেনা বন্ধ কর। এটা তোমাদের জন্যে উত্তম যদি তোমরা বুঝ। [সুরা জুমআ-৯ ]
আই আয়াতের মধ্যকার যিকরুল্লাহ দ্বারা প্রায় সকল মুফাসসিরদের মতে খুতবা উদ্দেশ্য । (তাফসিরে রাযি ১/৪৪৬, তাফসিরে রুহুল মাআনি ২৮/১০২, তাফসিরে ইবনে আব্বাস রাঃ)
হাদিসেও খুতবাকে যিকির হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে ।
فإذا خرج الإمام حضرت الملائكة يستمعون الذكر
যখন ইমাম খুতবা দিতে বের হন তখন ফেরেশতারা এসে যিকির শুনে অর্থাৎ খুতবা শোনে । [সহীহ বুখারী-১/৩০১, হাদীস নং-৮৮১, সহীহ মুসলিম হাদিস নং-৮৫০, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৩৫১]
সুতরাং কুরআন তিলাওয়াত ও জিকির যেমন অন্য ভাষায় দেয়া হয় না। তেমনি খুতবাও অন্য ভাষায় দেয়ার বিধান নেই।
২
হাদীসে জুমার খুতবাকে দুই রাকাত নামজের স্থলাবিসিক্ত করা হয়েছে ।
عن عمر بن الخطاب أنه قال: إنما جعلت الخطبة مكان الركعتين
হযরত উমর রাঃ বলেন, জুমু’আর খুতবাকে দুই রাক’আত নামাযের স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছে। (মুসান্নাফ ইবনে আবী শায়বাহ, হাদীস-৫৩৬৭)
অন্যত্র হযরত উমর রাঃ থেকে বর্ণিত আছে-
عن عمر بن الخطاب قال: كانت الجمعة اربعا فجعلت ركعتين من أجل الخطبة
হযরত উমর (রা.) বলেন, জুমু’আর নামায চার রাক’আত ছিল। এরপর খুতবার কারণে দুই রাক’আত করা হয়েছে। [মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বাহ, হাদীস-৫৩৭৪]
যদি খুতবা শুধুই বক্তৃতা হতো, তাহলে এর জন্য সময় নির্ধারিত কেন?
সুতরাং বুঝা গেল, নিছক বক্তৃতার নাম খুতবা নয়। এটি নামাযের মতই গুরুত্বপূর্ণ এবং দুই রাকাআত নামাযের স্থলাভিসিক্ত।
তাই নামাযে যেমন আরবী ছাড়া অন্য কোন ভাষায় পড়া যায় না, তেমনি খুতবাও অন্য ভাষায় পড়া যাবে না।
৩
খুতবা সহীহ হওয়ার জন্য শুধু পাঠ করা শর্ত। কেউ শোনা জরুরী নয়। এমনকি কয়েকজন বধির কিংবা ঘুমন্ত ব্যক্তির সামনে
খুতবা পাঠ করা হলেও জুমু’আ সহীহ হবে। [ফাতাওয়ায়ে শামী, ৩/১৯০, আল-বাহরুর রায়েক, ২/১৫৭
খুতবা যদি ওয়াজ বা বক্তৃতাই হতো, তাহলে বধির বা ঘুমন্ত ব্যক্তির সামনে খুতবা দিলে সহীহ হতো না।
৪
জুমু’আ সহীহ হওয়ার জন্য খুতবাকে শর্ত বলা হয়েছে। (দুররে মুখতার, ৩/১৯, ফাতহুল কাদীর, ২/৫৫)
খুতবা যদি ওয়াজ বা বক্তৃতা হতো, তাহলে নামায সহীহ হবার জন্য তাকে শর্ত বলা অযৌক্তিক।
৫
খুতবা দেওয়ার পর খতীব যদি অন্য কোনো কাজে ব্যস্ত হয়ে যান, আর নামায ও খুতবার মাঝে দীর্ঘ সময় ব্যবধান হয়, তাহলে পুনরায় খুতবা দিতে হয়। যদিও শ্রোতা প্রথমবারের ব্যক্তিরাই হোক না কেন। (আলবাহরুর রায়েক, ২/২৫৮]
যদি খুতবা শুধু ভাষণই হতো, তাহলে একই ভাষণ পূর্বের শ্রোতাদের সামনে আবার বলার কোনোই দরকার ছিল না।
৬
খুতবা শ্রবণ করা এবং চুপ থাকা ওয়াজিব। যবানে দরূদ শরীফ পড়া, তাসবীহ পাঠ করা, তাকবীর বলা অথবা সালামের উত্তর দেওয়া অবৈধ। খুতবা যদি শুধু ভাষণই হতো, তাহলে সালামের জবাব দেওয়া বা যিকর-আযকার থেকে নিষেধ করা হতো না।
৭
কোরআন শরীফকে অনেক আয়াতে ওয়াজ বা নসীহত বলা হয়েছে। (সূরা ইউনুস, আয়াত-৫৭, সূরা ছাদ, আয়াত-৮৭, সূরা কলম – ৫ ২, সূরা তাকবীর , আয়াত-২৭)
ফজরের আযানে الصلاة خير من النوم না বলে ‘নামায ঘুম হতে উত্তম’ বলা উচিত।
কারণ, শ্রোতারা আরবী ভাষায় এ সমস্ত আহ্বান বুঝতে পারে না। অথচ এমন কথা কেউ বলে না।
সুতরাং বুঝা গেল যে, খুতবাকে শুধুই ভাষণ-বক্তৃতা বলা একটি মনগড়া দুর্বল যুক্তি ছাড়া আর কিছুই নয়। যার কোন যৌক্তিক ভিত্তিই নেই।
নবীজী আরবী ভাষায় নয় বরং মাতৃভাষায় খুতবা দিয়েছেন?
এমন উদ্ভট যুক্তিও অনেকে দিয়ে থাকেন। আমরা বলি, তাহলে কি বলবেন যে, নবীজী আরবী ভাষায় নয় বরং মাতৃভাষায় কুরআন পড়েছেন, মাতৃভাষায় আজান দিয়েছেন। মাতৃভাষায় ইকামত দিয়েছেন।
তাহলেতো কুরআন তিলাওয়াত এবং নামাযের রুকন আরকান, আজান ও ইকামত সবই সবার নিজস্ব মাতৃভাষায় দিতে হবে। আরবীতে কেন দেয়া হয়?
বুঝা গেল এটি একটি অহেতুক কথা আর কিছুই নয়।
আরবী খুতবার আগের বাংলায় খুতবা কেন বিদআত নয়?
“আরবী খুতবার আগে বাংলায় খুতবা দেয়া” এ বাক্যটি ভুল।
কারণ, আমাদের মসজিদগুলোতে বাংলায় খুতবা দেয়া হয় না, বরং বাংলায় ওয়াজ-নসিহত করা হয়। খুতবাতো আরবীতেই দিতে হয়। দু’ই কারণে আমাদের মসজিদগুলোতে তা করা হয়। যথা-
ক)
জুমআর নামাযের নির্ধারিত সময় হবার এক দেড় ঘন্টা আগে মুসল্লিরা মসজিদে এসে একত্র হন। তখন অনেকেই গল্প গুজব করে গোনাহে লিপ্ত হয়, সেই কারণে খতীব সাহেব উপস্থিত মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে কুরআন ও হাদীস থেকে কিছু আলোচনা করেন। যাতে করে সময়টা কাজে লাগে। যে মুসল্লিরা তা শ্রবণ করেন, তারাও জানেন যে, এটা জুমআর খুতবা নয়। তেমনি যিনি বয়ান করেন, সেই খতীব সাহেবও জানেন এটা জুমআর খুতবা নয়। এটি কেবলি মানুষ নামাযের নির্ধারিত সময়ের আগে একত্রিত হওয়ায় সময়টি কাজে লাগানোর একটি প্রচেষ্টা মাত্র। সুতরাং এটিকে খুতবা ধরে বিদআত বলার কোন সুযোগ নেই।
কেউ যদি এটাকে বিদআত বলতে চায়, তাহলে মসজিদে মুসল্লিরা একত্রিত হলে, তাদের উদ্দেশ্য বয়ান করা হারাম হওয়া প্রমাণ করতে হবে।
অথচ এমন কোন প্রমাণ কেউ দেখাতে পারবে না।
সুতরাং বুঝা গেল, জুমআর মূল খুতবার আগে বাংলায় যে বয়ান করা হয়, তা বিদআত নয়। নিষিদ্ধ নয়। আর সেটি খুতবাও নয়। যদি কেউ আলাদা খুতবা মনে করে, তাহলেই কেবল তা বিদআত হবে। অথচ এমনটি কেউ মনে করে না।
খ)
১
عَاصِمُ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ زَيْدٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: كَانَ أَبُو هُرَيْرَةَ يَقُومُ يَوْمَ الْجُمُعَةِ إِلَى جَانِبِ الْمِنْبَرِ فَيَطْرَحُ أَعْقَابَ نَعْلَيْهِ فِي ذِرَاعَيْهِ ثُمَّ يَقْبِضُ عَلَى رُمَّانَةِ الْمِنْبَرِ، يَقُولُ: قَالَ أَبُو الْقَاسِمِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ مُحَمَّدٌ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: قَالَ الصَّادِقُ الْمَصْدُوقُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، ثُمَّ يَقُولُ فِي بَعْضِ ذَلِكَ: وَيْلٌ لِلْعَرَبِ مِنْ شَرٍّ قَدِ اقْتَرَبَ فَإِذَا سَمِعَ حَرَكَةَ بَابِ الْمَقْصُورَةِ بِخُرُوجِ الْإِمَامِ جَلَسَ. هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ عَلَى شَرْطِ الشَّيْخَيْنِ
আসেম রহঃ তাঁর পিতা থেকে বর্ণনা করেন, জুমু’আর দিন হযরত আবু হুরায়রা রাঃ জুতা খুলে মিম্বরের পাশে দাঁড়িয়ে মিম্বর ধরে বলতেন, আবুল কাসেম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, সাদেক মাসদুক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ধ্বংস আরবদের জন্য, ওই ফিতনার কারণে, যা নিকটবর্তী। এরপর যখন ইমাম সাহেবের বের হবার আওয়াজ শুনতেন, তখন তিনি বসে যেতেন। [মুসতাদরাকে হাকেম, ১/১৯০, হাদীস-৩৩৮]
২
عَنْ أَبِي الزَّاهِرِيَّةِ، قَالَ: كُنْتُ جَالِسًا مَعَ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ بُسْرٍ يَوْمَ الْجُمُعَةِ فَمَا زَالَ يُحَدِّثُنَا حَتَّى خَرَجَ الْإِمَامُ
হযরত আবদুল্লাহ বিন বুছর রাঃ জুমু’আর দিন প্রথমে ওয়াজ করতেন। যখন খতীব খুতবার জন্য আগমন করতেন, তখন তিনি ওয়াজ বন্ধ করতেন। [মুসতাদরাকে হাকেম, ১/২৮৮, হাদীস-১০১২]
গ)
হযরত তামীম দারী রাঃ, হযরত উমর রাঃ ও হযরত উসমান রাঃ-এর যুগে খুতবার পূর্বে ওয়াজ করতেন। (মুসনাদে আহমাদ, ৩১/৩৩১, হাদীস-১৫১৫৭)
সুতরাং বুঝা গেল, আমাদের মসজিদগুলোর আমলটি বিদআত হবার প্রশ্নই উঠে না।
আমাদের একটি প্রশ্ন
যদি খুতবা ভাষণেরই নাম হয়। যা মানুষকে বুঝানোর জন্য স্থানীয় ভাষায় দেয়া জরুরী হয়ে থাাকে। তাহলে প্রশ্ন হল, যদি এমন স্থান হয়, যেখানে একাধিক ভাষাভাষি মানুষ থাকে। যেমন হজ্বের সময় মক্কায় ও মদীনায়। তখন ইমাম কয় ভাষায় খুতবা দিবেন?
খুতবা অন্য ভাষায় দেয়ার দাবি ইসলামকে খেলনা বস্তু বানানোর ষড়যন্ত্র
আজান, ইকামত, তাকবীর, কুরআন, তিলাওয়াত, জিকির ও খুতবা এ সবই ইসলামের প্রতীক। এর কোনটিরই অন্য ভাষায় পড়ার কোন নজীর রাসূল সাল্লাল্লাম থেকে নেই। নেই সাহাবায়ে কেরাম রাঃ থেকে। এমনকি তাবেয়ী বা তাবেয়ীগণ থেকেও নেই।
তাই এসবকে অনুবাদ করে বলার দাবি করা ইসলামের প্রতীককে পাল্টে ফেলার ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছু নয়। আল্লাহ তাআলা আরবী ছাড়া অন্য ভাষায় খুতবা প্রদানকারী বিদআতি ব্যক্তিদের থেকে মুসলিম উম্মাহকে হিফাযত করুন। আমীন।
Source: https://ahlehaqmedia.com
No comments:
Post a Comment